সেকেন্ডারি ক্যাটাগরির প্রস্তুতি

গণিত অলিম্পিয়াডের আদ্যোপান্ত – সেকেন্ডারি ক্যাটাগরির প্রস্তুতি

পর্ব ৫: সেকেন্ডারি ক্যাটাগরিতে ভালো করার উপায়

সেকেন্ডারি ক্যাটাগরি বলতে মূলত নবম, দশম, এসএসসি পরীক্ষার্থী এবং ও–লেভেলের শিক্ষার্থীদের বুঝায়। এ ক্যাটাগরির ক্ষেত্রে বাছাই পরীক্ষা, আঞ্চলিক পর্যায় এবং জাতীয় পর্বের প্রশ্নগুলোতে একইসাথে একাডেমিক সিলেবাস এবং আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড সমমানের প্রস্তুতি, এই দুইটি বিষয়ের উপর বেশি জোর দেয়া হয়। একজন শিক্ষার্থী নবম শ্রেণিতে উঠার পর গণিতের নানা বিষয়ের সাথে প্রথমবারের মতো পরিচিত হয়, যেমন- ত্রিকোণমিতি, জ্যামিতির নতুন কিছু ধারণা, দ্বিপদী, স্থানাংক জ্যামিতি, প্রাথমিক ক্যালকুলাসের ধারণা ইত্যাদি। 
একজন শিক্ষার্থীর সেকেন্ডারী ক্যাটাগরির প্রশ্নগুলো আয়ত্ত্বে আনার জন্য গণিতের বিভিন্ন বিষয়ে ভালো ধারণা থাকা দরকার। একইসাথে, শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানে আগ্রহ থাকা, প্রশ্নগুলো নিয়ে চিন্তা করার অভ্যাস থাকাটাও জরুরী। আজকে আমরা সেকেন্ডারি ক্যাটাগরির বিভিন্ন বিষয় ও কিছু সমস্যা নিয়ে আলোচনা করবো। 

বীজগণিত: সেকেন্ডারী ক্যাটাগরির জন্য বিভিন্ন ধরণের ফাংশন, সমীকরণ, অসমতা এই বিষয়গুলো জানা থাকা জরুরী। নিজ শ্রেণির একাডেমিক বই থেকে এই বিষয়গুলো ভালোভাবে আয়ত্ত্ব করতে হবে। পাশাপাশি, এসবের উপর আরো কিছু একাডেমিক বই পড়তে পারলে খুব ভালো হয়। কয়েকটি সমস্যা নিয়ে আমরা আলোচনা করি-

সেকেন্ডারি ক্যাটাগরি - বীজগণিতের সমস্যা

ফাংশনের গাণিতিক সমস্যা নিয়ে কিন্তু অনেকেরই চিন্তা থাকে, কঠিন মনে হয় শিক্ষার্থীদের কাছে। এক্ষেত্রে, একটা উপায় হতে পারে সমস্যাটিকে ছোট ছোট আকারে ভেঙ্গে চিন্তা করা কিংবা ছোট ছোট মানের জন্য ফাংশনের মান বের করা। একটা সমস্যা দেখা যাক-

সেকেন্ডারি ক্যাটাগরি - ফাংশনের সমস্যা
সংখ্যাতত্ত্ব: সংখ্যা নিয়ে আলোচনা শুরু করা হলে অনেকগুলো বিষয় চলে আসে। যেমন- বিভাজ্যতা, মৌলিক সংখ্যা, ভাগশেষ সংক্রান্ত বিভিন্ন থিওরেম, সংখ্যার উৎপাদক নির্ণয় ইত্যাদি। এ জিনিসগুলো নিয়ে আমরা একাডেমিক বইতে কিছুটা তাত্ত্বিক ধারণা পেলেও চিন্তা করার মত যথেষ্ঠ সমস্যা সাধারণত পাই না । এজন্য, এসব আয়ত্ত্বে আনার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন গণিতের বই, আর্টিকেল, ব্লগ ইত্যাদি নিয়মিত পড়া যেতে পারে। আমরা একটি সমস্যা আলোচনা করি-

সেকেন্ডারি ক্যাটাগরি- সমীকরণ সমাধান

গণনা: গণনার ক্ষেত্রে মুলত বিন্যাস ও সমাবেশের প্রাথমিক ধারণা থাকা দরকার। নবম-দশম শ্রেণিতে যদিও দ্বিপদী এর একটি অধ্যায় আছে, তবে এর চেয়ে বেশি শিখতে চাইলে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বইয়ের বিন্যাস ও সমাবেশ এর অধ্যায় দেখে নিতে হবে। এছাড়া,  পিজিওন হোল প্রিন্সিপল, কালারিং, গ্রাফ, সম্ভাব্যতা ইত্যাদি ধারণাগুলোও কাজে লাগে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, অন্য কোন টপিকের সমস্যার মধ্যে গণনার ধারণা ব্যবহার করে সমাধানে পৌঁছাতে হয়। যেমন নিচের সমস্যাটি দেখা যাক-

সেকেন্ডারি ক্যাটাগরি - গণনার সমস্যা সমাধান

জ্যামিতি: জ্যামিতির ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম একজন শিক্ষার্থীকে নিজ বইয়ের উপর ভালো দখল রাখতে হবে। আমাদের এনিসিটি বইয়ের জ্যামিতি অংশটুকু  চমৎকারভাবে গুছানো আছে। উপপাদ্য নিয়ে পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে। বিশেষ করে, সর্বসমতা কিংবা সদৃশ সংক্রান্ত উপপাদ্য, বৃত্তের ধারণা, এগুলো খুবই কাজে লাগে। উচ্চতর গণিত বইয়ের জ্যামিতি অংশটুকুও বেশ কাজের। এছাড়া, স্থানাংক জ্যামিতি কিংবা ত্রিকোণমিতির ধারণা ব্যবহার করে বিভিন্ন জ্যামিতিক সমস্যার সমাধান খুব সহজে করা যায়। আমরা একটি সমস্যা নিয়ে আলোচনা করি-

সেকেন্ডারি ক্যাটাগরি - জ্যামিতির সমস্যা

আজ এ পর্যন্ত থাক। আশা করছি, এই লিখা থেকে সেকেন্ডারি ক্যাটাগরির প্রস্তুতি নিয়ে একটা ভালো ধারণা পাওয়া গেছে। আসলে অলিম্পিয়াডে ভালো করতে হলে বেশি বেশি সমস্যা সমাধানের কোন বিকল্প নেই। আমাদের সাইটে সাপ্তাহিক সমস্যা বিভাগে বিভিন্ন গাণিতিক সমস্যা দেয়া হয়, কেউ চাইলে এগুলো নিয়মিত সমাধান করতে পারে।

পরবর্তী ব্লগে আমরা হায়ার সেকেন্ডারি ক্যাটাগরির প্রস্তুতি নিয়ে লিখবো। এছাড়াও, বইয়ের তালিকা নিয়ে খুব শীঘ্রই আমাদের আরো ব্লগ প্রকাশিত হবে। সে পর্যন্ত বাংলার ম্যাথের সাথে থাকুন, গণিতের সাথে থাকুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *